স্টিভ রোডস প্রধান কোচ হতে চূড়ান্ত সাক্ষাৎকার দিতে আসছেন
ডিটেকটিভ স্পোর্টস ডেস্ক
রিচার্ড পাইবাস, ফিল সিমন্সরা সাক্ষাৎকার দিয়ে গেছেন। ফলপ্রসূ কিছু হয়নি। বিসিবি এবার তাকিয়ে স্টিভ রোডসের দিকে। দুই পক্ষের কথাবার্তা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ পদের জন্য চূড়ান্ত সাক্ষাৎকার দিতে এই সপ্তাহেই ঢাকায় আসছেন ইংলিশ এই কোচ।
চন্দিকা হাথুরুসিংহে দায়িত্ব ছাড়ার পর থেকেই প্রধান কোচ খুঁজে হয়রান বিসিবি। শিগগিরই নতুন কোচ আসছে বলে বারবার বলা হলেও শেষ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি কাউকে। তবে বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে যা জানালেন, তাতে এবার অপেক্ষার অবসান হচ্ছে বলেই ইঙ্গিত।
“স্টিভ রোডস আমাদের সংক্ষিপ্ত তলিকায় আছেন। আশা করছি আগামি ২-৩ দিনের মধ্যে বোর্ডের সঙ্গে দেখা করবেন। মূলত প্রধান কোচ পদে সাক্ষাৎকারের জন্য তাকে ডাকা হচ্ছে। চূড়ান্ত সাক্ষাৎকার দিতে যখন কেউ আসেন, মৌলিক কিছু ব্যপারে তার সঙ্গে একমত হয়েই আনা হয়। সেটা সবার ক্ষেত্রে করেছি। ওঁর ক্ষেত্রেও করেছি।”
“আপনারা অতীতে দেখেছেন পাইবাস, সিমন্স এসেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় রোডস এসেও নিয়োগ প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত যারা আছেন, তাদের সঙ্গে দেখা করে ওঁর উপস্থাপনা দেবেন। সেভাবেই তার সঙ্গে কথা হয়ছে। আগামি বিশ্বকাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে বোর্ড কিভাবে চায় সেটা জানাবে। উনি যেভাবে চান, সেটাও জানাবেন।”
প্রধান কোচ নিয়োগের জন্য বিসিবি পরার্শক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল গ্যারি কারস্টেনকে। প্রধান নির্বাহী জানালেন, কারস্টেনের সুপারিশ ও বিসিবির তালিকা মিলিয়ে যৌথ প্রচেষ্টায় ডাকা হয়েছে রোডসকে।
নিজের আগ্রহের কথা ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে জানিয়েছেন রোডসও। তবে সঙ্গে বলেছেন, কিছুই এখনও চূড়ান্ত নয়।
“আমি নিশ্চিত করতে পারি, বাংলাদেশের সঙ্গে কথা হয়েছে। এটাও নিশ্চিত করতে পারি, আমি আগ্রহী। আমার মতে এটা দারুণ সম্মানজনক দায়িত্ব। তবে এই মুহূর্তে কিছুই নিশ্চিত নয়। কারও উচিত নয় পূর্বানুমান করে এটিকেই নিশ্চিত ধরে নেওয়া।”
ইংলিশ ক্রিকেটে দারুণ পরিচিত মুখ রোডস। খেলোয়াড়ি জীবনে ছিলেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন ১১ টেস্ট ও ৯ ওয়ানডে। আরও অনেক সমৃদ্ধ ক্যারিয়ার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে। ১৯৮১ সালে ইয়র্কশায়ারের হয়ে কাউন্টি ক্যারিয়ার শুরু করলেও পরে থিতু হন উস্টারশায়ারে। ১৯৮৫ থেকে ২০০৪ সালে ক্যারিয়ারের শেষ পর্যন্ত খেলেছেন উস্টারেই। ১৯৯৪ সালে হয়েছিলেন উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটার।
২০০৬ সালে কোচ হিসেবে উস্টারে শুরু হয় তার নতুন অধ্যায়। কোচিং ক্যারিয়ারের সাফল্য ছাড়িয়ে যায় খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ারকেও। টানা প্রায় এক যুগ পালন করেছেন ডিরেক্টর অব ক্রিকেটের দায়িত্ব। উস্টারের সঙ্গে তার ৩৩ বছরের সম্পর্কে ছেদ পড়েছে গত জানুয়ারিতে অনাকাক্সিক্ষতভাবে। তরুণ ক্রিকেটার অ্যালেক্স হপবার্নের ধর্ষণ মামলার কথা দীর্ঘসময় ক্লাব কর্তৃপক্ষকে না জানানোয় বরখাস্ত করা হয় তাকে।
তরুণ প্রতিভা খুঁজে বের করা ও গড়ে তোলায় রোডসকে দারুণ কার্যকর বলে মনে করা হয়। উস্টারকে গতবছর কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় ধাপ থেকে প্রথম ধাপে তুলেছিলেন মূলত নিজেদের গড়ে তোলা ক্রিকেটারদের দিয়েই। উস্টার অধ্যায় চুকেবুকে যাওয়ার পর তার অভিজ্ঞতাকেই কাজে লাগাচ্ছিল ইংল্যান্ডের বোর্ড। তরুণ প্রতিভা অন্বেষণের দায়িত্ব ছিল তার।
বিসিবির প্রধান নির্বাহী জানালেন, রোডসের অভিজ্ঞতার কারণেই মূলত তার প্রতি আগ্রহী হয়েছে বোর্ড।
“আমরা অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দিয়েছি। প্রাথমিকভাবে বেশ কয়েকজন কোচের সাথে কথা বলেছিলাম আমরা। বড় নাম ছিল, অভিজ্ঞতাও ছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে ওঁরা আসতে পারেননি। এ মুহূর্তে যে কয়জন কোচ পাওয়া গেছে, তার মধ্যে সে সবচেয়ে অভিজ্ঞদের একজন।”
“আগামী বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডে হবে, এটাও ছিল বিবেচ্য বিষয়। ইংল্যান্ডের কন্ডিশন বা ওই ধরনের কন্ডিশনের কাউকে যদি দলের সাথে সম্পৃক্ত করা যায়, তাহলে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যেতে পারে।”
প্রধান নির্বাহীর আশা, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের আগে দলের ক্যাম্পেই পাওয়া যাবে নতুন প্রধান কোচকে।